Saturday, April 19, 2025

ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করল আফ্রিকান ইউনিয়ন

আরও পড়ুন

পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার ইসরায়েলি রাষ্টদূতকে বহিষ্কার করেছে আফ্রিকার দেশগুলোর জোট আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)। এইউ নেতারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে জোটের কোনো বৈঠক বা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন না তারা।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমোরস্টেইন এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে জেরুজালেম পোস্টকে বলেন, রুয়ান্ডার টুটসি সম্প্রদায়ের গণহত্যার শিকারদের স্মরণে গতকাল রোববার আদ্দিস আবাবায় (ইথিওপিয়ার রাজধানী) আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। সেই কর্মসূচিতে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল এবং তিনি উপস্থিতও হয়েছিলেন। কিন্তু কর্মসূচিস্থলে তাকে দেখেই আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের চেয়ারম্যান ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বিষোদ্গার করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে তাকে অনুষ্ঠান থেকে চলে যেতে বলেন।

তিনি বলেন, এইউ কমিশনের চেয়ারম্যান যা করেছেন, তা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। রুয়ান্ডার জনগণ এবং ইহুদি ধর্মাবলম্বীরা— উভয়েই যে শতকের পর শতক ধরে ভয়াবহ জাতিগত সহিংসতার ইতিহাস বহন করছে— এই মৌলিক সত্য আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতারা জানেন না।

আরও পড়ুনঃ  হামলা চালাতে যাওয়া সব ইসরায়েলি ড্রোন গুঁড়িয়ে দিল ইরান

এ ইস্যুতে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেবে বলেও জানিয়েছেন ওরেন মারমোরস্টেইন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। ওই বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত ২০ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

আরও পড়ুনঃ  দক্ষিণ লেবাননের ২৫টি শহর খালি করার নির্দেশ ইসরায়েলের

ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৫০ হাজার ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

এদিকে যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছে যে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হবে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের প্রধাননমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার অনুগত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশে সহিংসতায় জড়িতদের জবাবদিহি করা নিয়ে যা বললো যুক্তরাষ্ট্র

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

এদিকে গাজায় অভিযান শুরুর থেকে আফ্রিকান ইউনিয়নের সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয় ইসরায়েলের। আইসিজেতে গণহত্যা মামলা হয়েছে, সেই মামলার বাদি আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রভাবশালী দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ