Friday, June 20, 2025

মুসলিম মুখোশে মোসাদ নারী স্পাই, ইরানের ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন

আরও পড়ুন

মাথায় হিজাব, হাতে কোরআন আর মুখে ইরানি বিপ্লবের প্রশংসা—একটি নিখুঁত ইসলামি নারী রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি। লিখতেন ইসলাম ও ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রশংসায়। এমনকি তাঁর লেখালেখি ঠাঁই পেয়েছিল খামেনির সরকারি ওয়েবসাইটেও। কিন্তু ইরানের গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, এই নারী ছিলেন মোসাদের এক ভয়ংকর অস্ত্র। নাম ক্যাথরিন পেরেজ সকদাম।

ব্রিটিশ-ফরাসি বংশোদ্ভূত এই নমুসলিম নারী নিজেকে শিয়াপন্থী মুসলিম হিসেবে উপস্থাপন করতেন। ইসলাম ও ইরানপ্রীতির মুখোশে তিনি প্রবেশ করেছিলেন ইরানের গভীর নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভেতরে।

আরও পড়ুনঃ  আগেও ইরান সরকারের পতন ঘটিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, ফলাফল কী হয়েছিল?

ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্যাথরিন বিভিন্ন সময়ে ইরানে প্রবেশ করেন সাংবাদিক, গবেষক ও চিন্তাবিদের পরিচয়ে। সহজেই মিশে যান রেভল্যুশনারি গার্ডসহ শীর্ষ মহলে। এমনকি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গেও তার সাক্ষাৎ হয়েছিল বলে জানা গেছে।

কিন্তু সবচেয়ে ভয়ানক ছিল ইরানের নারী সমাজের উচ্চপর্যায়ে তাঁর প্রবেশ। ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে তিনি ইরানি সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের স্ত্রীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। ঘনিষ্ঠতা, আড্ডা ও বিশ্বাসের আড়ালে গৃহিণীদের মুখ থেকে তুলে আনতেন চরম গোপন তথ্য—স্বামী কোথায় কর্মরত, কখন কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে মিটিং করছেন, কারা তাঁর সাথে থাকেন ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ  নতুন ‘আত্মঘাতী ড্রোন’ উন্মোচন করল ইরান

এই কথোপকথন গোপনে রেকর্ড করতেন ক্যাথরিন। পরবর্তীতে সেই তথ্যই পরিণত হতো রক্তাক্ত মিশনে। ইরানের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ২০২০ ও ২০২১ সালে যেসব পরমাণু বিজ্ঞানী ও সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যার শিকার হতে হয়েছে, তার পেছনে ছিল ক্যাথরিনের সংগ্রহ করা তথ্য।

বিশ্লেষকরা আরও বলেন, আজও ইসরায়েলের বিভিন্ন নিখুঁত সামরিক অভিযানের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে সেই সময়ের তথ্যভাণ্ডার। ২০২১ সালের শেষদিকে ইরানি গোয়েন্দারা তাঁর গতিবিধি নিয়ে সন্দিহান হলে ক্যাথরিন দ্রুত ইরান ত্যাগ করেন। তবে তার আগেই তিনি রেখে গেছেন এক রক্তাক্ত ও ভয়ানক ইতিহাস।

আরও পড়ুনঃ  ইরানের হামলায় শত্রুপক্ষের হতাহতের সংখ্যা জানা গেল

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কেবল একটি গুপ্তচর কাহিনি নয়, বরং নারীত্ব, সরলতা ও ধর্মীয় মুখোশকে পুঁজি করে একটি দেশের সামরিক কাঠামোকে ভেঙে ফেলার এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ