Saturday, April 19, 2025

আমাগো কথা ছাড়া পুলিশ আইলে বাইন্দা থুমু জায়গার ওপর: বিএনপি নেতা

আরও পড়ুন

পিরোজপুরের নাজিরপুরে বিএনপির এক নেতার একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই অডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, আমাগো কথা ছাড়া পুলিশ আইলে বাইন্দা থুমু জায়গার ওপর।’ এ নিয়ে এলাকায় টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া অডিওটি উপজেলার ৩ নম্বর দেউলবাড়ী দোবড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর পদ্মডুবী ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মন্টু হাওলাদারের।

তিনি ওই এলাকার মৃত আনোয়ার হাওলাদারের ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি অনলাইনে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জুয়াড়িচক্র মহলের দালাল বিএনপি নেতা মো. মন্টু হাওলাদার গত ২১ জানুয়ারি হাইউল ও তার ভাই কাইউম নামের দুই যুবককে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। বিষয়টি নিয়ে হাইউল নাজিরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।

তার প্রেক্ষিতে ওই বিএনপি নেতা পুলিশকে উদ্দেশ করে মোবাইলের অপর প্রান্তে থাকা তার এক সহযোগী আওয়ামী লীগ নেতাকে বলেন, ‘এ জগতে যারা আছে, তাদের মধ্যে আমরাই ভালো মানুষ।

আরও পড়ুনঃ  পলককে মারতে আসেন কাদের, বের করে দেওয়া হয় গণভবন থেকেও

এর থেকে ভালো মানুষ এহন আর নাই। আমাগো ধারেই আচার-বিচার সব আসে, আর আইবেও। আমরা পুলিশকে আইতে কইলে আইবে, না কইলে আইবে না। আমাগো কথা ছাড়া পুলিশ আইলে বাইন্দা থুমু জায়গার ওপর।আমাগো ১ লক্ষ টাকা দিলে এই কেসটা আমরা দেখমু।’ এ সময় তাকে মারামারির ঘটনা বর্ণনা দিতে শোনা যায়।

তিনি বলেন, ‘পুলিশের কাছে মামলা করতে গেছে, আমার নাম শুনে মামলা নেয় নাই। ফাঁড়ি থেকে ফোন করে আমাকে বলছে মামলা নেয় নাই। ডিসি, থানা, ফাঁড়ি সব বুকিআপ করে ফেলাইছি ফোনে’ এ সময় তাকে আরো বলতে শোনা যায়, ‘ইদ্রিস ডাক্তার এ ফয়সালাটা করে দিবে, দুই গ্রুপই বিএনপির।

নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহমুদ আল ফরিদ ভুঁইয়া জানান, মন্টু হাওলাদার নামের পদ্মডুবী এলাকার এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তদন্ত চলমান, আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুনঃ  সুগন্ধা পয়েন্টে ঘোরাঘুরির সময় পর্যটকের আকর্ষিক মৃত্যু

তিনি বলেন, ‘অডিওটির বিষয়ে খতিয়ে দেখব। আইন হাতে তুলে নেওয়ার ক্ষমতা কারো নাই, কেহ আইনের ঊর্ধ্বে না। এ বিষয়ে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশ কোনো ব্যক্তি বিশেষের কথায় পরিচালিত হয় না, আমরা অবশ্য আইনের ভেতর দিয়ে পরিচালিত হই। ব্যক্তি বিশেষের বক্তব্য অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। পল্লী বিদ্যুৎ ব্যাপারটা আমি জিএম সাহেবকে বলেছি এটাও আমরা আইনের মাধ্যমে দেখতেছি।’

ওই একই নেতার আরো একটি ভিডিওতে দেখা যায়, নাজিরপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মীরা লাইন পরিষ্কারের জন্য তার বাড়ির সামনের গাছ কাটলে তাদেরকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘গাছে ঢাল জড়াইয়া দিয়ে যাবেন, আমার নামসহ বলবেন যে সে বলছে, আপনি অফিসে ফোন দেন না হলে যেতে পারবেন না, আপনাদের গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখব।’

আরও পড়ুনঃ  কোটা নিয়ে স্ট্যাটাস, বড় বিনিয়োগ হারাল টেন মিনিট স্কুল

পল্লী বিদ্যুতের কর্মী বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষের গাছের ঢাল কেটেছি, কেউ কিছু বলল না তখন মন্টু বলেন, আমি হাজারের মধ্যে একজন।’

হামলার শিকার হাইউল নামের স্থানীয় এক ছাত্রনেতা জানান, মন্টু ও তার ক্যাডার বাহিনী এলাকায় অনলাইন জুয়া, চাঁদাবাজিসহ মানুষকে নানা হুমকি দেয়। আমি তার এসব কর্মকাণ্ডের ভিডিও ধারণ করি। মন্টু এসব জেনে আমাদের দুই ভাইকে পদ্মডুবী বাজারে এনে ভিডিও, অডিও ডিলেট করতে বলে। এগুলো ডিলেট না করলে আমাদের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে। তাদের এই ভিডিও, অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছেড়ে দেওয়ায় আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে।

এ বিষয়ে মন্টু হাওলাদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ