রাজনীতি ও সমাজে বিদ্বেষমূলক ব্যাশিং কালচারকে “ব্যাড কালচার” আখ্যা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস। সম্প্রতি একটি গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, একে অপরকে ঘায়েল করার তীর্যক ও অপমানজনক মন্তব্যের যে প্রবণতা গড়ে উঠেছে, তা সমাজের সুস্থতার জন্য মারাত্মক হুমকি।
অধ্যাপক সায়মা বলেন, “তীর্যক মন্তব্যে ঘায়েল করার প্রবণতা একটি অসভ্যতা। দুঃখজনকভাবে সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠী এই ব্যাশিং কালচারকে প্রমোট করছে। এটি স্পষ্টতই একটি নেতিবাচক ও বিপজ্জনক দিক।”
তিনি আরও বলেন, যুক্তিতে হার মানা কখনোই দুর্বলতা নয় বরং সেটাই চিন্তার বিকাশের সূচনা হতে পারে। “হেরে যাওয়া মানেই সবকিছু শেষ নয়। যুক্তিতে পরাজিত হলে পড়াশোনা করে যুক্তি ফিরিয়ে আনা যায়। আমাদের উচিত যুক্তি-তর্কের চর্চার পাশাপাশি একে অপরকে সম্মান করা।”
নিজেকে একজন প্রতিবাদী মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে সায়মা ফেরদৌস বলেন, “আমি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের ঘোর বিরোধী। তবে এর মানে এই নয় যে কেউ যা খুশি তাই বলবে বা আক্রমণ করবে। শিক্ষক হিসেবে অর্জিত সম্মানকে কেন্দ্র করেও আমাকে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। রাতে মোবাইল বন্ধ রাখতে হয়, কারণ রাত ১২টার পর শুরু হয় নোংরা কল, প্রাঙ্ক কল।”
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “কেউ যদি সত্যের পক্ষে আওয়াজ তোলে, তার বিরুদ্ধে যদি হেনস্তা হয়— তাহলে রাষ্ট্রের ভূমিকা কী? নাগরিক সমাজের কি কোনো দায়িত্ব নেই?”
নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন অধ্যাপক সায়মা। তিনি বলেন, “আজও নারীদের রাজনীতিতে আসতে হলে ‘গায়ের চামড়া মোটা’ করতে হয়। এটি কখনোই একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে পারে না। রাজনীতিতে বহু প্রতিশ্রুতিশীল নারী ছিলেন, যারা এই কালচারের শিকার হয়ে ঝরে পড়েছেন।”
বিশ্লেষকদের মতে, অধ্যাপক সায়মা ফেরদৌসের বক্তব্য শুধু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, বরং সমাজে প্রচলিত একটি গভীর সংকটের দিকেই ইঙ্গিত করে।