Monday, June 16, 2025

ভোরে বাবা-মাকে খুন, সন্ধ্যায় মসজিদে ঢুকে হামলা

আরও পড়ুন

প্রথমে নৃশংসভাবে খুন করলেন নিজের বাবা-মাকে। এরপর গেলেন মসজিদে; ঢুকেই ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা। ছুরিকাঘাতে আহত করলেন চারজনকে। 

এমনই ভয়ংকর এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। গত বুধবার (২৮ মে) ভোরে রাজ্যটির পূর্ব বর্ধমানের মেমারি শহরের কাশিয়ারা কাজীপাড়া এলাকায় ঘটেছে ঘটনাটি। এরই মধ্যে হুমায়ুন কবীর নামে ওই হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।   

জানা যায়, নিহত দম্পতির নাম মুস্তাফিজুর রহমান (৬৬) ও মমতাজ পারভিন (৫৬)। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে বাড়ির সামনে রাস্তা থেকে। তাদের সঙ্গেই থাকতেন ছেলে হুমায়ূন কবীর। ওই ঘটনার পর থেকে হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। ফলে, সন্দেহের তীর গিয়ে পড়ে ছেলের ওপর। ঠিক কী কারণে বাবা-মাকে খুন করল ছেলে, তার উত্তর খোঁজা শুরু করে পুলিশ।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, ঘরে খুন করে লাশ দুটি টানতে টানতে বাড়ির বাইরে রাস্তায় নিয়ে আসে আততায়ী। বুধবার সকালে স্থানীয়রাই প্রথম রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পান গলা কাটা অবস্থায় রক্তাক্ত স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ পড়ে আছে। এরপর স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থলে ছুটে যান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক ব্যানার্জিও। মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুনঃ  প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্যে সফর, যে কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে জয়

পরে বুধবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থানার অন্তর্গত মতিগঞ্জ এলাকায় একটি মসজিদের প্রবেশ করে বেশ কয়েকজনের ওপর ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে অভিযুক্ত হুমায়ূন কবীর। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সংঘটিত এ হামলার ঘটনায় কমপক্ষে চারজন আহত হন।

এই ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যায় বনগাঁ থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছান বনগাঁ পুলিশ জেলার সুপার (এসপি) দীনেশ কুমার। আহত ব্যক্তিদের দ্রুত উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বনগাঁ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সে সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে পুরো ঘটনা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত।

আরও পড়ুনঃ  আয়রন ডোম ভেঙে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা সদর দফতরে হামলা চালাল ইরান

এদিকে আটক ব্যক্তির খবর পেয়েই ওই মসজিদ থেকে অন্তত কয়েকশো মানুষ থানায় এসে হুমায়ূন কবীরকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে। পাশাপাশি থানায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। একসময় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় থানা চত্বর। পরে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে লাঠিপেটা করতে বাধ্য হয় পুলিশ। এই ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাতে বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হামলা হুমায়ূন কবীরের বয়স ৩৫ বছর। ওই ব্যক্তি তার বাবা (হাজী মুস্তাফিজুর রহমান) ও মা (মমতাজ বেগম) কে খুন করে মসজিদে হামলা চালায়। এই হুমায়ন চারজনকে ছুরিকাঘাতে আহত করেছে। তাদের সবাইকে স্থানীয় বনগাঁ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  আরও ২ ইসরাইলি গুপ্তচর আটক করেছে ইরান

পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে স্থানীয় মসজিদ থেকে কয়েকশো মানুষ থানায় এসে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে এবং থানায় ভাঙচুর চালায়, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এই ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) হুমায়ূন কবীর এবং থানায় হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ জনকেই বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ