Saturday, April 19, 2025

‘মার্চ ফর গাজা’‌ কর্মসূচিতে ঢুকে নাশকতা চালাতে পারে আ’লীগ, গোয়েন্দা তথ্যে আশঙ্কা

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম যখন সকল রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সর্বস্তরের মানুষ এক কাতারে এসে ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে যাচ্ছেন তখন সেটাকে সামনে রেখে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের এক নতুন ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে, গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কর্মসূচি ‘মার্চ ফর গাজা’র সাথে মিল রেখে পতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গোপনে দলবদ্ধভাবে ঢাকামুখী হচ্ছেন। দলটির আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এই পদযাত্রায় ঢুকে নাশকতা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর এক গোয়েন্দা তথ্য সামনে আসার পর পুলিশ প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

সাম্প্রতিক ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে, গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গোপনে দলবদ্ধভাবে রাজধানী ঢাকার দিকে যাত্রা শুরু করেছেন।তারা রাজধানীতে অস্থিরতা তৈরি কিংবা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই তৎপরতা সরকারের নজরে আসার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘাতের ঝুঁকি মাথায় রেখে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ।

আরও পড়ুনঃ  পুলিশের ভেস্ট পরে বন্দুক হাতে সংঘর্ষে যুবলীগকর্মী, অতঃপর...

জানা গেছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজধানীতে একটি বড় আকারের শক্তি প্রদর্শনের পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী। উদ্দেশ্য—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা। ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির সুযোগে তারা সহজেই ঢাকা ঢুকে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে, এই পরিকল্পনার খবর গোয়েন্দা সংস্থার হাতে এলে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয় প্রশাসনের ভেতরে। ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিএসবি) থেকে সব থানায় বিশেষ নির্দেশনা পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, রাজনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলায় পুলিশ সদস্যদের আটটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা মানতে হবে।

এই নির্দেশনায় বলা হয়—সন্দেহভাজনদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ, যাদের নামে মামলা আছে তাদের মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অবস্থান নিশ্চিত করে গ্রেপ্তার, গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চেকপোস্ট বসানো, রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও নৌঘাটে নজরদারি জোরদার করা, রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বে যুক্ত ব্যক্তিদের সহায়তায় ঢাকামুখী যাত্রা প্রতিহত করা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও উসকানি ছড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া, অর্থ সহায়তাকারীদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, এবং ভাড়ায় চালিত গাড়ি ও যাত্রীবাহী পরিবহনের ওপর নজরদারি বাড়ানো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যেই এই পরিকল্পনার তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, যা জনমনে বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করেছে।

আরও পড়ুনঃ  নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রাব্বানী গ্রেফতার

উল্লেখ, প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে ১২ এপ্রিল (শনিবার) বিকেল ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে ‘মার্চ ফর গাজা’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ব্যাপক জনসমাগমের মধ্যে এই কর্মসূচিতে ঢুকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী নাশকতা চালাতে পারে বলে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এর আগে, গত ৭ এপ্রিল সারা বিশ্বের সাথে বাংলাদেশেও গাজা গণহত্যার প্রতিবাদে গ্লোবাল স্ট্রাইক পালিত হয়। এতে দেশব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল’ কর্মসূচিতে লাখো মানুষ রাজপথে নামে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুয়েক জায়গায় কর্মসূচির বাইরে থেকে কাপড়ে মুখ বাধা কিছু লোক দোকানপাটে এসে ভাঙচুর করে ও মালামাল লুটে নেয়। বিভাগীয় এক শহরে একটি দোকানে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে এবং অপর একটি দোকান ভাঙচুর করে। দেশব্যাপী এ ধরনের ব্যবসা বাণিজ্য আরও শত শত দোকান ও শো রুমে চললেও কেউ এসবে হাত দেয়নি। বিশেষ করে লুট হওয়া একটি দোকানের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার নিজে মিডিয়াকে বলেন, ‘ গ্লোবাল স্ট্রাইকের মিছিল থেকে দোকানে হামলা হয়নি। প্রোগ্রাম শেষে সন্ধ্যা ৬টা সাড়ে ছয় টার দিকে মুখবাধা একদল লোক এসে দোকান ভাঙচুর ও লুট করে। পুলিশ জড়িতদের অনেককে গ্রেফতারও করেছে, যাদের কেউই কোনো ধর্মীয় সংগঠনের লোক নয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ইমেজ বিনষ্ট করতে এই নাশকতার পেছনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ