ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি এবং আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের একটি অভিযোগ অনুসন্ধানের জবাবে মার্কিন সরকার নজিরবিহীন এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বৃহস্পতিবার (৫ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চার বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি এবং আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের একটি অভিযোগ অনুসন্ধানের জবাবে মার্কিন সরকার নজিরবিহীন এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
মার্কিন সরকার আইসিসির যে চার বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা হলেন, উগান্ডার সোলোমি বালুঙ্গি বোসা, পেরুর লুজ ডেল কারমেন ইবানেজ কারানজা, বেনিনের রেইন অ্যাডিলেড সোফি আলাপিনি গানসো ও স্লোভেনিয়ার বেটি হোলার।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে বলেন, এই চার বিচারক যুক্তরাষ্ট্র ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে আইসিসির ‘অবৈধ ও ভিত্তিহীন পদক্ষেপ নিতে’ সক্রিয়ভাবে ভূমিকা নিয়েছেন। আইসিসির ভেতরে রাজনীতি ঢুকে গেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও অভিযুক্ত করার জন্য ‘মিথ্যা দাবি’ করছে।
ট্রাম্পের প্রশাসনের এমন পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে আইসিসি। সংস্থাটি বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক বিচারিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা খর্ব করার প্রচেষ্টা।
বিচারক বোসা ও ইবানেজ কারানজা উভয়ই ২০১৮ সাল থেকে আইসিসির বেঞ্চে রয়েছেন। তারা ২০২০ সালে একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, যার মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধের একটি অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে সামনে আনা হয়।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনলেও ২০২১ সাল থেকে আইসিসি অনুসন্ধানের বিষয়টিতে গুরুত্ব না দিয়ে আফগান সরকার ও তালেবানের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগের দিকে মনোযোগ দিয়েছে।
গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গত নভেম্বরে নেতানিয়াহু, সাবেক ইসরাইলি প্রতিরক্ষা প্রধান ইয়াভ গ্যালান্ট এবং হামাস নেতা ইব্রাহিম আল-মাসরির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আইসিসির বিচারকরা। রুবিও বলেন, আলাপিনি গানসো ও হোলার নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুমোদনের রায় দিয়েছেন।
এসব পদক্ষেপ আইসিসির প্রতি মার্কিন প্রশাসনের বৈরী মনোভাব বাড়িয়ে তুলেছে।