যুদ্ধকালীন ধাক্কায় নেতৃত্ব বদল! ইসরায়েলি হামলার পর ক্ষমতা হস্তান্তর করলেন খামেনি
ইসরায়েলের টার্গেটেড হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক ও বিজ্ঞানীসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর, কঠিন নিরাপত্তা বাস্তবতায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি তার ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। এমন বিস্ফোরক তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, খামেনি যুদ্ধকালীন নেতৃত্ব ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর ‘সুপ্রিম কাউন্সিল’-এর হাতে তুলে দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এটি ইরানের অভ্যন্তরে চলমান ‘জরুরি যুদ্ধ পরিস্থিতি’ মোকাবিলার অংশ এবং ভবিষ্যতে যদি খামেনির মৃত্যু হয়, তখন যেন কমান্ড শূন্যতা না তৈরি হয়, সে জন্যই এটি একটি সতর্কতামূলক ক্ষমতা হস্তান্তর।
এদিকে, পাঁচ দিন ধরে খামেনি জনসমক্ষে অনুপস্থিত রয়েছেন। তার অবস্থান নিয়েও জল্পনা চলছে। ইরান ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি বর্তমানে তেহরানের উত্তর-পূর্বে লাভিজানে একটি ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। সঙ্গে রয়েছেন তার ছেলে মোজতবা খামেনি ও পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা।
ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ইরানের বিপ্লবী গার্ডের প্রধানকে হত্যা করেছে, যা দেশটির সামরিক নেতৃত্বে বড় ধাক্কা। অন্যদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার এক পোস্টে বলেছেন,
“আমরা জানি খামেনি কোথায় আছেন। তিনি একটি সহজ লক্ষ্যবস্তু, কিন্তু আমরা এখন তাকে হত্যা করছি না।”
ট্রাম্প আরও বলেন,
“আমরা চাই না বেসামরিক মানুষ বা মার্কিন সৈন্যদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। তবে আমাদের ধৈর্য ফুরিয়ে আসছে।”
ইরান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা না করলেও, বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, দেশটি এখন এক বাস্তবিক জরুরি অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। দেশজুড়ে রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতা বাড়ছে, ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ, জনসচারণা সীমিতকরণ ও নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
খামেনির এ সিদ্ধান্ত ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইরানের ক্ষমতার ভারসাম্য এখন একটি সামরিক নেতৃত্বনির্ভর মডেলে ঢুকে পড়ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মোজতবা খামেনিকে উত্তরসূরি করার প্রস্তুতি অনেক দিন ধরেই চলছিল, তবে বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া নতুন কৌশল হতে পারে।
ইসরায়েলি হামলার সরাসরি জবাবে ইরানও পাল্টা আঘাত করেছে, তবে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার চাপে ইরানের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের এই ব্যাকফুটে যাওয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় বার্তা দিচ্ছে।