Monday, June 16, 2025

তুরস্ক-ইসরাইল সঙ্ঘাত অনিবার্য!

আরও পড়ুন

ট্রাম্পের অনেক ঘনিষ্ঠজন মনে করেন, সামরিকভাবে তুরস্ক এবং ইসরাইল যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নেই। কৌশলগতভাবে, তুরস্কের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা এবং ইরানকে নিয়ন্ত্রণ করার ইসরাইলি প্রচেষ্টাকে জটিল করে তোলে। রাজনৈতিকভাবে, তুরস্কের কথাবার্তা এবং জোট প্রায়ই মুসলিম বিশ্বে ইসরাইলি বৈধতাকে ক্ষুণ্ন করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের জন্য কতটুকু যেতে পারে তার একটি সীমানা রয়েছে। সেই সীমার কাছাকাছি চলে এসেছে আমেরিকা

বর্তমানে তুরস্ক ও ইসরাইলের মধ্যে সরাসরি সামরিক সঙ্ঘাত অনিবার্য নয়, তবে সিরিয়ায় উভয় দেশের ভিন্ন কৌশলগত স্বার্থ ও ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা সঙ্ঘাতের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়িয়ে তুলেছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর তুরস্ক ও ইসরাইল উভয়েই সিরিয়ায় প্রভাব বিস্তারে সক্রিয় হয়েছে।

তবে ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর আঙ্কারার সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের নানা ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় ইসরাইলি লবি বেশ শঙ্কিত। এই লবি ইসরাইলের সাথে তুরস্কের সঙ্ঘাতকে অনেক বড় যুদ্ধের আশঙ্কার বিষয় হিসেবে তুলে ধরে তাতে আমেরিকান হস্তক্ষেপ কামনা করছে। তবে এই প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের গভীর ক্ষমতা বলয়ের একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্রের এমন হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করছে।

সিরিয়ায় প্রভাব বিস্তারে লড়াই

ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে, আঙ্কারা সিরিয়ার নতুন ইসলামপন্থী অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে প্রায় ৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। তুরস্ক সেখানে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন, বিমানঘাঁটি ব্যবহারের চুক্তি এবং সিরীয় বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করছে। অন্য দিকে ইসরাইল সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে একটি বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করেছে এবং তুরস্কের পরিকল্পিত ঘাঁটিগুলোতে বিমান হামলা চালিয়েছে, যা তুরস্কের প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে একটি বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইসরাইলপন্থী আমেরিকান কিছু কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, তুরস্ক-ইসরাইল সঙ্ঘাতের প্রথম স্ফুলিঙ্গ সিরিয়ায় হতে পারে, বিশেষ করে এখন যখন তুরস্ক কার্যকরভাবে ইসরাইলের সাথে সীমান্ত ভাগ করে নেয়। ইরান দক্ষিণ লেবাননকে একটি বাস্তব ইরানি উপনিবেশে পরিণত করার জন্য হিজবুল্লাহ ব্যবহার করার মতো এরদোগান সিরিয়াকে একটি প্রক্সি শক্তিতে পরিণত করার জন্য তাহরির আল-শামকে ব্যবহার করছেন বলেও অনেক ইসরাইলী মনে করে।

আরব দেশগুলোতে তুরস্কের প্রভাব

তুরস্ক ইসরাইলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়িয়ে বেশ কিছু আরব দেশে তার প্রভাব ক্রমেই সম্প্রসারিত করছে। বিশেষ করে এটি করা হচ্ছে, নরম শক্তি (অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ধর্ম), সামরিক উপস্থিতি এবং কূটনৈতিক যোগাযোগের মিশ্রণের মাধ্যমে। তেলআবিব এই প্রবণতাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, কারণ এটি কৌশলগত এবং আদর্শিক উভয় প্রভাবই বহন করে।

কাতার : তুরস্ক এবং কাতার ঘনিষ্ঠ সামরিক, রাজনৈতিক এবং আদর্শিক সম্পর্ক ভাগ করে নেয়। কাতারে তুরস্কের একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে (তারিক বিন জিয়াদ ঘাঁটি) এবং দু’টি দেশ প্রায়ই মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থনের মতো আঞ্চলিক বিষয়গুলোতে একমত হয়।

লিবিয়া : জাতিসঙ্ঘ-স্বীকৃত জাতীয় সরকারের সমর্থনে তুরস্ক লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করে, ভূমধ্যসাগরে নৌ ও বিমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করেছিল। এটি আঙ্কারাকে উত্তর আফ্রিকায় একটি কৌশলগত অবস্থান দিয়েছে।

সোমালিয়া ও সুদান : সোমালিয়ার অবকাঠামো এবং নিরাপত্তা বাহিনীতে তুরস্ক ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। সুদানে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ওমর আল-বশিরের অধীনে, তুরস্ক লোহিত সাগরের সুয়াকিন দ্বীপে প্রবেশাধিকার লাভ করে, যা নৌ-উচ্চাকাক্সক্ষা নিয়ে ইসরাইলি ও মিসরের উদ্বেগের জন্ম দেয়।

ইরাক : তুরস্ক উত্তর ইরাকে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, মূলত কুর্দি গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে কিন্তু স্থানীয় আরব রাজনীতিকেও তা প্রভাবিত করছে। এই অভিযানের মুখে পিকেকে তুর্কি সরকারের সাথে সমঝোতা চুক্তি ও নিজেদের বিলুপ্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে।

তিউনিসিয়া ও আলজেরিয়া : যদিও এখানে প্রভাব কম, তুরস্ক ইসলাম-বান্ধব রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আখ্যান প্রচার করে। তবে আলজেরিয়ায় তুর্কি প্রভাব প্রবলভাবে বাড়ছে।

তেলআবিবের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ

ইসরাইল বিভিন্ন কারণে তুরস্কের প্রভাবকে সন্দেহের চোখে দেখে। ইসলামপন্থী জোট, তুরস্ক মুসলিম ব্রাদারহুড এবং হামাসের মতো আন্দোলনকে সমর্থন করার বিষয় ইসরাইলি নীতির বিরোধী।

এ ছাড়া একাধিক আরব অঞ্চলে তুরস্কের সামরিক উপস্থিতি আঞ্চলিক ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। তুরস্ক নিজেকে ফিলিস্তিনি অধিকার এবং ইসলামিক কারণের রক্ষক হিসেবে হাজির করে, আঞ্চলিক নেতৃত্বের জন্য সৌদি আরব, মিসর এবং ইসরাইলের সাথে প্রতিযোগিতা করছে।

কূটনৈতিক উত্তেজনা ও বাগযুদ্ধ

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়েব এরদোগান আল্লাহর কাছে ইসরাইলের ধ্বংস কামনা করেছেন। ইসরাইল একে ‘বর্ণবাদী ও ঘৃণাসূচক’ বলে নিন্দা করেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে তুরস্ক ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

উত্তেজনা প্রশমনে উভয় দেশ আজারবাইজানে ‘ডিকনফ্লিকশন’ আলোচনা শুরু করেছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্ত হয়েছে।

১০ বছরের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ?

আমেরিকার ইহুদি লবির একজন সহযোগী এবং সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মাইকেল রুবিন দাবি করেছেন যে ১০ বছরের মধ্যে তুরস্ক ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হবে। রুবিন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে তেলআবিব এবং আঙ্কারার মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তুরস্ক ও সিরিয়া সম্পর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইলি লবিকে বিরক্ত করছে বলে মনে হচ্ছে। হোয়াইট হাউজের সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত এবং ১৩ বছরের বিরতির পর সেই দেশে আমেরিকান দূতাবাস ফের চালু করার সিদ্ধান্ত ছিল রাষ্ট্রপতি এরদোগান এবং ট্রাম্পের মধ্যে গভীর আলোচনার ফলাফল। যদিও আগামী সময়ে এরদোগান ও ট্রাম্পের মধ্যে গঠনমূলক সংলাপ একাধিক চুক্তির মাধ্যমে একীভূত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তুরস্কের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কর্মসূচি পুনঃপ্রবর্তনের মতো বিষয়গুলোতে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

তুরস্কজুড়ে ফেতুল্লাহ গুলেন সংগঠনের পরামর্শদাতা হিসেবে পরিচিত আমেরিকান সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মাইকেল রুবিন এইআইতে প্রকাশিত তার নিবন্ধে বেশ কিছু প্রশ্ন করেছেন। তার মতে, তুর্কি সেনাবাহিনী ভূমধ্যসাগরের পশ্চিমতীরের সবচেয়ে কাছের স্থান তেলআবিবের উত্তরে আক্রমণ অভিযান পরিচালনা করতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকা কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে জানতে চাইলে রুবিন উল্লেখ করেন যে ইহুদি রাষ্ট্রটি ন্যাটো সদস্যের সাথে লড়াই করবে এমন সম্ভাবনা আর খুব একটা নেই। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে যে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে তা আর গোপন নয়।

ট্রাম্পের তুরস্কের ওপর বড় বাজি

ট্রাম্প ০২ এর অন্যতম লক্ষ্য হলো যুদ্ধ থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখে যুদ্ধের হুমকি ও কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে স্বার্থ আদায় করা। এর মধ্যে ট্রাম্প যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন, কিন্তু নতুন কোনো যুদ্ধ বাধাননি। যুদ্ধ খেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনার হাতিয়ার। বিভিন্ন সামরিক ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা টেবিলের চারপাশে বা পৃথক কক্ষে বসে বিভিন্ন দেশে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভূমিকা পালন করেন। পূর্ববর্তী রাউন্ডে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো পরে একাধিক রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়। এই খেলা থেকে কৌশলীরা তাদের লাভ আদায় করে নিতে পারেন।

যুদ্ধ খেলার আরেকটি সুবিধা রয়েছে যে, তারা কূটনীতিক এবং রাজনীতিবিদদের ইচ্ছাকৃত চিন্তাভাবনা এড়াতে এবং বাস্তবতার মুখোমুখি হতে বাধ্য করে। লক্ষ্য থাকে দলগুলোকে জয় বা পরাজয় নিশ্চিত করা নয়, বরং বিশ্লেষকদের দলগতভাবে চিন্তাভাবনা করতে বা এমন পরিস্থিতির জন্য পরিকল্পনা করতে বাধ্য করা, যা তারা আগে বিবেচনা করেনি।

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইলী লবির ধারণা, রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তুরস্কের ওপর একটি বড় বাজি ধরেছে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতাকারী রাষ্ট্রের বাস্তবতার ওপর নয়, বরং রাষ্ট্রপতি রজব তৈয়ব এরদোগানের কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলা মিষ্টি অর্থহীনতা এবং সম্ভাব্য ব্যবসায়িক চুক্তির ওপর ভিত্তি করে।

ইসরাইলি লবি মনে করে, তুরস্কের পক্ষে হামাস বিরোধী হওয়া সম্ভব নয়। এখন যখন বেশির ভাগ হামাস তেহরানে আর নেই সেখানে ইস্তাম্বুল যে এখন হামাসকে আশ্রয় এবং সমর্থন প্রদানকারী দেশ তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। রুবিনও মনে করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বুঝতে হবে ন্যাটো সদস্যরাষ্ট্র এবং ইহুদি রাষ্ট্রের মধ্যে যে যুদ্ধকে একসময় অকল্পনীয় বলে মনে হয়েছিল, সে ধরনের যুদ্ধ যদি হয় তাহলে পরিণতি কেমন হবে? এতে কি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের ঝাঁক জড়িত থাকবে? নাকি পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নৌ সংঘর্ষ হবে? মার্কিন সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহার করে উভয় দেশের মধ্যে বিমান যুদ্ধ হবে?

তার ধারণা, তুরস্ক ইসরাইলকে ভূমধ্যসাগর এবং পশ্চিমতীরের মধ্যে সবচেয়ে সংকীর্ণ স্থানে, মাত্র ৮ মাইল দূরে ঠেলে দিচ্ছে? এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকা কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে? ইসরাইলের প্রতিবেশীরা কী করবে? জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, যিনি দেশে জনপ্রিয় নন, তিনি কি ইসরাইলের প্রতি তীব্র শত্রুভাবাপন্ন তার নিজের জনগণের চাপ সহ্য করতে পারবেন? তুরস্ক কি সিরিয়ার জিহাদিদের ব্যবহার করবে যেমন এরদোগান আজারবাইজানের নাগোর্নো-কারাবাখ আক্রমণকে সমর্থন করার জন্য করেছিলেন?”

রুবিন মনে করেন এই যুদ্ধ ১০ বছরে সহজেই ঘটতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন তুরস্কের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি পুনরুজ্জীবিত করার সাথে সাথে, পেন্টাগন এবং কংগ্রেস উভয়ই জিজ্ঞাসা করছে যে তুর্কি যদি ইসরাইলের বিরুদ্ধে এসব বিমান ব্যবহার করে তবে এর প্রভাব কী হবে? কূটনীতিকরা প্রায়ই স্বাচ্ছন্দ্য এবং একগুচ্ছ বিকল্প বাস্তবতা তৈরি করেন। কাগজে-কলমে এগুলো ভালো দেখালেও বাস্তবতাকে অস্বীকার এবং চরম অবহেলার প্রতীক।

এসব বিচেনায় রুবিনের মতো ইসরাইলপন্থীরা মনে করে, ইসরাইল ও তুরস্কের মধ্যে যুদ্ধ আর খুব বেশি দূরের সম্ভাবনা নয়; এটি ১০ বছরের মধ্যে সহজেই ঘটতে পারে। তাদের প্রশ্ন হলো ওয়াশিংটন কি তা রোধ করতে পারবে, সামরিক বিক্রির ফলে সেই ফলাফলের ওপর যে প্রভাব পড়তে পারে সেটি। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাদের মন জয় করতে চায়।

তবে আমেরিকান অনেক বিশ্লেষক এখনো মনে করেন, বর্তমানে তুরস্ক ও ইসরাইলের মধ্যে সরাসরি সামরিক সঙ্ঘাত অনিবার্য নয়, তবে সিরিয়ায় উভয় দেশের ভিন্ন কৌশলগত স্বার্থ এবং রাজনৈতিক বিবাদ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। যদি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, তবে সঙ্ঘাতের সম্ভাবনা বাড়তে পারে।

এটা ঠিক যে দুই পক্ষের মধ্যে সঙ্ঘাত সম্ভাবনাকে অনেক বড় করে দেখানোর একটি কারণ হলো তুরস্কের ওপর আমেরিকান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং এফ-৩৫ নিয়ে আলোচনা যাতে ভেঙে পড়ে তার ব্যবস্থা করা। ইসরাইল এখন মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্ককে সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ মনে করে। যার জন্য দেশটির গোপন বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতায় ইন্ধন দেয়া থেকে শুরু করে এরদোগানের শাসন পরিবর্তন পর্যন্ত ব্যাপক পরিসরের কর্মসূচি রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময় এসব কর্মসূচির কোনোটাই সেভাবে সফল হচ্ছে না।

ট্রাম্পের অনেক ঘনিষ্ঠজন মনে করেন, সামরিকভাবে তুরস্ক এবং ইসরাইল যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নেই। কৌশলগতভাবে, তুরস্কের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা এবং ইরানকে নিয়ন্ত্রণ করার ইসরাইলি প্রচেষ্টাকে জটিল করে তোলে। রাজনৈতিকভাবে, তুরস্কের কথাবার্তা এবং জোট প্রায়ই মুসলিম বিশ্বে ইসরাইলি বৈধতাকে ক্ষুণ্ন করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের জন্য কতটুকু যেতে পারে তার একটি সীমানা রয়েছে। সেই সীমার কাছাকাছি চলে এসেছে আমেরিকা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ