কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মায়ের সঙ্গে নদীতে গোসল করতে নেমে তিন বোন স্রোতে ভেসে যায়। এ সময় দুইজনকে উদ্ধার করলেও পানিতে তলিয়ে যায় একজন। এ ঘটনার ৩৪ ঘণ্টা পর হারিয়ে যাওয়া একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৯ জুন) বেলা ১১টার দিকে মেঘনা নদীর ভৈরব পৌর শহরের মুশকিলাহাটী রেলসেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মা কবিতা বেগমের সঙ্গে তিন কন্যা—রিয়ম (৭), তৈয়বা (১০) ও টিয়া (১৪)। পানিতে বল নিয়ে খেলছিল। হঠাৎ হাত ফসকে বলটি স্রোতে ভেসে যায়। বল ধরতে গিয়ে স্রোতের টানে একসঙ্গে তিন বোনই ভেসে যায়। স্থানীয় লোকজন ছোট দুই বোনকে উদ্ধার করতে পারলেও নিখোঁজ হয় তৈয়বা।
মারা যাওয়া তৈয়বা স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা কামাল মিয়া পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
অটোরিকশার চাপায় শিশু নিহত, সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
পার্কের ওয়াচ টাওয়ার থেকে লাফ দিয়ে ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু
বিজ্ঞাপন
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে মেঘনা নদীর ভৈরব রেলসেতু এলাকায় কবিতা বেগম তার তিন মেয়েকে নিয়ে গোসল করতে যান। মেয়েরা পানিতে নেমে বল হাতে খেলছিল। এ সময় বলটি হাত থেকে ছুটে স্রোতের টানে দূরে চলে যায়। বল আনতে গিয়ে হঠাৎ তিন বোনই পানির স্রোতে ভেসে যায়। মা কাপড় ধোয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। নদীতে মেয়েদের ডুবে যেতে দেখে চিৎকার করেন তিনি। আশপাশে থাকা অন্যরা ছুটে এসে মরিয়ম ও টিয়াকে জীবিত উদ্ধার করেন। তবে তলিয়ে যায় মেঝো মেয়ে তৈয়বা। নদীতে প্রচণ্ড স্রোতে তখন আর তাকে পাওয়া যায়নি।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ভৈরব ইউনিটের ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। তারপর নদীতে তল্লাশি শুরু করেন। পরে ময়মনসিংহ থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল অভিযানে যোগ দেয়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে নদীতে ভেসে ওঠে নিখোঁজ তৈয়বার মরদেহ।
নিহত শিশু তৈয়বার বাবা কামাল মিয়া বলেন, আমার মেয়েরা ভালো করে সাঁতার জানে না। বল নিয়ে নদীতে গোসল করা পছন্দ ওদের। এই বলই আমার মেয়ের জীবন নিয়ে গেল। তিনি আরও বলেন, ছোট ও বড় মেয়ে সুস্থ আছে। আল্লাহ আমার কাছ থেকে তার নেয়ামত নিয়ে নিলো।
ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস পরিদর্শক আজিজুল হক উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, ভৈরবের মেঘনা নদীতে স্রোত ছিল। এ জন্য উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা কঠিন ছিল। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছি। যেহেতু নদীতে এখন প্রচুর স্রোত। নিকটবর্তী এলাকার লোকজন নদীতে এখন সতর্কতা অবলম্বন করে নামা উচিৎ। বিশেষ করে শিশুদের একদমই নদীর পাশে না আসা উচিৎ। এ বিষয়ে অভিবাবকদের সচেতনতা জরুরি।