Saturday, August 23, 2025

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২ কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি

আরও পড়ুন

এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২০ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ২ কোটি ডলার) ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন মাহমুদ খালিল। ফিলিস্তিনপন্থি কর্মকাণ্ডের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ১০০ দিনের বেশি সময় আটক থাকার পর তিনি এ দাবি করেন। তার অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও মিথ্যা অভিযোগে তাকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছিল। খবর রয়টার্সের।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) খালিলের আইনজীবী জানান, যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তর (ডিএইচএস) এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দাবি জানানো হয়েছে। মার্কিন আইনের অধীনে, কেউ ক্ষতিপূরণ মামলা করার আগে সরকারের কাছে সরাসরি দাবি দাখিল করতে পারে। এখন সরকারের হাতে ছয় মাস সময় রয়েছে এই দাবির জবাব দিতে।

ডিএইচএসের একজন মুখপাত্র দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানান, খালিলকে আটক করার পদক্ষেপ আইনানুগ ছিল এবং এ ধরনের ক্ষতিপূরণ দাবি অযৌক্তিক।

আরও পড়ুনঃ  চুরি করার পর পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে ধর্ষণ

কে এই মাহমুদ খালিল?

৩০ বছর বয়সী মাহমুদ খালিল একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ও যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী গ্রিন কার্ডধারী। মার্চ মাসে তাকে গ্রেপ্তার করে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি ছিল, ফিলিস্তিনিদের প্রতি খালিলের সমর্থন নাকি যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাই তাকে নির্বাসনের (ডিপোর্টেশন) উদ্যোগ নেওয়া হয়।

তবে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর গত ২০ জুন আদালতের নির্দেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর পরই শুরু হয় সরকারের বিরুদ্ধে তার আইনি পাল্টা পদক্ষেপ।

মুক্তির পর এক বিবৃতিতে খালিল বলেন, ‘আমি চাই, এই ঘটনা প্রশাসনের জন্য একটি শিক্ষা হোক। ট্রাম্প কেবল টাকার ভাষা বোঝে, এটা আমি বুঝে গেছি।’

আরও পড়ুনঃ  বায়তুল মোকাররম মসজিদের আসছে নতুন সুখবর: ধর্ম উপদেষ্টা

তিনি আরও বলেন, যদি প্রশাসন তার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চায় এবং ভবিষ্যতে শুধু মতপ্রকাশের কারণে কাউকে আটক বা নির্বাসন না করার প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে তিনি তার দাবির বিষয়ে বিবেচনা করবেন।

গাজার যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলমান বিক্ষোভগুলো সম্পর্কে ট্রাম্প বারবার সেগুলোকে ‘ইহুদিবিরোধী’ বলে দাবি করে আসছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এসব বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের ডিপোর্ট করা হবে।

মাহমুদ খালিল এই ঘোষণার পর প্রথম টার্গেট ছিলেন। তার গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মানবাধিকার ও ফিলিস্তিনপন্থি সংগঠনগুলোর মধ্যে প্রবল প্রতিবাদ দেখা দেয়। তারা বলেন, ইসরায়েলবিরোধী সমালোচনাকে ইহুদিবিরোধিতার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য হুমকি।

আরও পড়ুনঃ  এখনো নিখোঁজ ৩ ছাত্রী ও ২ অভিভাবক, দাবি মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের

নিউ জার্সির জেলা আদালতের বিচারক মাইকেল ফার্বিয়ার্জ রায়ে বলেন, খালিলের মতপ্রকাশের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল। বিচারক তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে মামলার পুরোপুরি নিষ্পত্তি এখনো হয়নি। মাহমুদ খালিল যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অধিকার রক্ষায় আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, মাহমুদ খালিলের মামলা যুক্তরাষ্ট্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, অভিবাসী অধিকার এবং ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে। এ ছাড়া ২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে ট্রাম্পের কড়া অবস্থান এবং তার ভবিষ্যৎ প্রশাসনের নীতিনির্ধারণ নিয়েও শঙ্কা বাড়াচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ