আনোয়ার টিভি, ঝামেলা টিভি কিংবা মনিরজমিন। প্রথম দেখাতে যে কেউ মূল ধারার গণমাধ্যমের সাথে গুলিয়ে ফেলতে বাধ্য। সম্প্রতি এমন বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের অনুকরণে স্যাটায়ার পেজ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। বর্তমানে এসব পেজে অপতথ্য, ভুয়া খবর ছাড়াও প্রচুর বিভ্রান্তিকর রাজনৈতিক কনটেন্ট পোস্ট করা হচ্ছে।
ফলে বিভ্রান্তিকর এসব সংবাদকে বিশ্বাস করে শেয়ারও করছেন অনেকে। না বুঝেই এ সব অপতথ্য কিংবা গুজবের মধ্যে জড়িয়ে ফেলছেন নিজেদেরকে। আসন্ন নির্বাচনে এসব ভুয়া গণমাধ্যম মানুষের মধ্যে ব্যাপক বিভ্রান্তি ছড়ানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নাম, লোগো কিংবা নিউজের ধরন দেখে যে কারোরই মনে হবে দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম। মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের মূল ধারার গণমাধ্যমকে নকল করা এ সব পেজ। ফলে বিভ্রান্ত হয়ে এসব সংবাদকে বিশ্বাসও করছেন অনেকে। এমনকি নিজের ফেজবুক ওয়ালে শেয়ারও করছেন এসব বিকৃত সংবাদ।
ইদানীং যমুনা টিভির লোগো নকল করে ‘Anwar Tv’ নামে একটি ফেসবুক পেজ পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০২৫ সালের ২৬ মে পেজটি চালু করা হয়। তিন মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই যার ফলোয়ার সংখ্যা দাঁড়ায় ২ লাখ ৩৮ হাজারে।
যদিও পেজটির ডিটেইলসে লেখা, ‘এ পেজটি শুধুমাত্র বিনোদনের উদ্দেশে তৈরি করা হয়েছে, দয়া করে কোনো পোস্ট সিরিয়াসলি নিবেন না, আমরা শুধুমাত্র সমসাময়িক নিউজগুলো সারকাজম আকারে প্রকাশ করি’ এমনটি লেখা থাকলেও এটা নিয়ে ব্যাপক বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। কারণ এই পেজ থেকে তৈরি কনটেন্ট ব্যাপক শেয়ারের কারণে এটা যে ফান কনটেন্ট, সেটা অনেকেই বুঝতে পারেন না। ফলে ব্যাপক নেতিবাচক মন্তব্যও করতে দেখা গেছে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের।
ইংরেজি দৈনিক The Daily Star-কে নকল করে তৈরি করা হয়েছে ‘The Delhi Star’ নামে আরেকটি পেজ। যার ফলোয়ার সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার। এখানেও সমসাময়িক বিভিন্ন সংবাদ সারকাজম আকারে প্রকাশ করা হলেও অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। এমনকি তাদের পোস্টগুলো সিরিয়াসলি নিয়ে অনেককে শেয়ারও করছেন নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
দৈনিক মানবজমিনকে নকল করে গত ১৩ আগস্ট খোলা হয়েছে ফেসবুক পেজ মনিরজমিন। লোগো, ফ্রন্ট অনেকটা একই মূল মানবজমিনের মতো। যেখানে রাজনৈতিক নেতিবাচক পোস্ট করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া প্রথম সারির পত্রিকা, টিভি চ্যানেল নিয়েও অসংখ্য পেজ খোলা হয়েছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাধারণ মানুষ আসল ও নকল পেজ আলাদা করতে না পারার কারণে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। ভুয়া খবরের কারণে অনেক সময়েই দায় গিয়ে পড়ছে প্রকৃত গণমাধ্যমের ওপর। তাদের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে জনমনে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান সময়ে অনলাইনে পাওয়া তথ্য যাচাই করে বিশ্বাস করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভেরিফায়েড (নীল চিহ্নযুক্ত) পেজ অনুসরণ করা উচিত। একই সঙ্গে ভুয়া পেজ চিহ্নিত হলে রিপোর্ট করার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।