Saturday, August 23, 2025

নির্বাচনি সমঝোতার পথে পাঁচ ধর্মভিত্তিক দল

আরও পড়ুন

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাঁচটি ধর্মভিত্তিক দল একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি দল থেকে দুই জন প্রতিনিধি নিয়ে একটি লিয়াজোঁ কমিটিও গঠিত হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপের পর আবারও আলোচনায় বসবে এই পাঁচটি কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক দল।

পাঁচটি দলের নেতারা বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন, বিগত বেশ কিছু সময় ধরে একটি ইসলামি ঐক্য গড়ে তোলার বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করছেন দলগুলোর নেতারা। সম্ভাব্য এই নির্বাচনি সমঝোতায় একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী জামায়াতে ইসলামীকে রাখা হয়নি। ইতোমধ্যে জামায়াতের নেতৃত্বে পাঁচ ইসলামী দলের ঐকমত্য হওয়ার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা হলেও নেতারা বিষয়টিকে ‘অপপ্রচার’ বলে জানিয়েছেন।

তবে কোনও কোনও দল শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করার পক্ষে মত দিয়েছেন। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে কেউ কেউ জানান, প্রথমত পাঁচটি ইসলামি দলের এই উদ্যোগ একটি সমঝোতা, এটি কোনও জোট নয়। বিশেষ করে জোটের প্রধান কে হবেন, কে মুখপাত্র হবেন, এসব ইস্যুতে লিয়াজোঁ কমিটি গঠিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এই সমঝোতায় জামায়াত থাকবে কিনা, তা নিয়ে এখনই চূড়ান্ত কিছু বলার পক্ষে নন তারা।

আরও পড়ুনঃ  যে শর্তে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নতুন প্রস্তাবে একমত হবে জামায়াত

নির্বাচনি সমঝোতায় সম্মত হয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি (একাংশ)। ইতোমধ্যে প্রতিটি দল থেকে দুজন করে নেতার সমন্বয়ে লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বৃহৎ জোটে যাওয়ার ক্ষেত্রে ‘মতপার্থক্য’
চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অফিসে দেশের পাঁচটি ইসলামি দলের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর চরমোনাই।

ওই সভায় পাঁচটি বিষয়ে একমত পোষণ করা হয়। এগুলো হচ্ছে—নির্বাচনে ইসলামপন্থিদের আসনভিত্তিক একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে কৌশলগত আলোচনা এগিয়ে নেওয়া; আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত একটি ইসলামি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তোলার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, যাতে নতুন করে কোনও ফ্যাসিবাদ কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে; ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করা; প্রয়োজনীয় ও মৌলিক সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল করা।

আরও পড়ুনঃ  যেভাবে দাঁড়িপাল্লা হারায় জামায়াত, ফেরত পেতে পারে কীভাবে?

ইসলামী আন্দোলনের বৈঠকের পর জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিসের কার্যালয়ে বৈঠক করেন পাঁচটি দলের প্রতিনিধিরা।

বিভিন্ন দলের নেতারা জানান, এই পাঁচটি দলের সমঝোতার বিষয়ে জামায়াতও থাকবে বলে একটি আলোচনা বিভিন্ন মাধ্যমে সম্প্রতি সামনে এসেছে। তবে এই বিষয়টিকে একেবারে অপপ্রচার বলে মনে করেন নেতারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মঙ্গলবার (২৪ জুন) জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা পাঁচটি ইসলামি দল এক প্রার্থী কেন্দ্রিক বা ভোটের একটি বাক্স করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। সেই উদ্যোগ চলমান রয়েছে। আমরা পাঁচ দল একত্রিত হয়েছি। এখনও পুরো প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত হয়নি।’

আরও পড়ুনঃ  যে দুই শর্তে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে

মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের মধ্যে লিয়াজোঁ কমিটি হয়েছে। নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা কীভাবে ঐক্য করবো, সবাই মিলে কোনদিকে যাবো, বৃহৎ কোনও জোটে যাবো কিনা, এই জায়গাটাতে মতপার্থক্য আছে।’

মাওলানা আফেন্দী জানান, পরবর্তী বৈঠক সংলাপের কারণে হচ্ছে না। ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শেষে পরের বৈঠক হবে বলে মনে করেন তিনি।

‘পাঁচটি ইসলামি দলের নির্বাচনি সমঝোতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আমরা একটি ঐকমত্যে পৌঁছেছি। কিন্তু এখনও আলাপ-আলোচনা বাকি আছে’ বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ