ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্বাচিত মেয়র হিসেবে এখনো শপথ না নিলেও নগর ভবনে মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। এর এক দিন পর আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপদেষ্টাসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে ইশরাক হোসেন লেখেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পরিবর্তে অন্যায়ভাবে যাদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, সেই স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার সচিব এবং তালিকাভুক্ত বাকি কর্মকর্তাদের জানাই শুভ সকাল!
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই প্রতিটি অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তিমূলক আলাদা আইনি অভিযোগ দায়ের করা হবে। আদালত সঠিক বিচার সম্পন্ন করতে পারলে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কোনো কর্মস্থল বা পদবী পাওয়া অনেক দূরের কথা। দোষী সাব্যস্ত হলে উপযুক্ত দণ্ড থেকে রেহাই হবে না একজনেরও।’
পোস্টে এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘বিটকয়েন নিয়ে লুঙ্গির তলে লুকায় পালানোর সুযোগ থাকবে না।’
পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘যেকয়টা আইন ভঙ্গ, সংবিধান লঙ্ঘন, আদালত অবমাননা, সরকারি চাকরির আচরণবিধি ভঙ্গ ও দুর্নীতির অভিযোগ স্পষ্ট পাওয়া গিয়েছে, তার তালিকা করা হয়েছে। তবে এটি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।’
এর আগে, সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে নগর ভবনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ইশরাক হোসেন। সভাস্থলের ব্যানারে তাকে ‘মাননীয় মেয়র’ হিসেবেই উল্লেখ করা হয়। ব্যানারে লেখা ছিল— পরিচ্ছন্ন ঢাকা ও নাগরিক সেবা নিশ্চিতকল্পে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় সভা। প্রধান অতিথি ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, মাননীয় মেয়র, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
এদিকে, সোমবার (১৬ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া একজন নেতার কাছ থেকে এমন আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইস্যুতে স্থানীয় সরকার বিভাগ কোনো আইন লঙ্ঘন করেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন। গেজেটের মেয়াদ শেষ এবং পরবর্তী সময়ে করপোরেশনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় নতুন করে শপথ নেওয়ার আইনি সুযোগ আর নেই।’
তিনি বলেন, ‘এইভাবে নগর ভবন দখল করে ক্ষমতা প্রদর্শন করা দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং আইনের শাসনের প্রতি অসম্মান। এতে দক্ষিণ সিটির দৈনন্দিন নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।’